1. jasemruman@gmail.com : Ruman : Mohammad Jasemuddin Ruman

ফেনী জবস্ ডেস্ক:
আপনি যতো স্মার্ট আর সুযোগ্য প্রার্থীই হোন না কেন, চাকরির ইন্টারভিউতে যেতে হলে আপনাকে প্রস্তুতি নিতেই হবে। ইন্টারভিউ একটা যুদ্ধক্ষেত্রের মতো। এখানে প্রথমেই নিজের সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা দিতে হবে। ভুল করলে দ্বিতীয় সুযোগ আর পাওয়া যাবে না। তাই ইন্টারভিউ দক্ষতা বাড়াতে অবশ্যই কিছু কৌশল গ্রহণ করুন।

কথা না বলেই ইন্টারভিউ রুমে ঢুকে প্রথমেই আপনার জোরোলো উপস্থিতি বুঝাতে হবে। সোঁজা হয়ে দাঁড়িয়ে যারা ইন্টারভিউ নিচ্ছেন তাদের সালাম দিন বা অভিবাদন জানান। তাদের চোখে চোখ রাখুন, এরপর ভদ্রভাবে, আত্মবিশ্বাস নিয়ে হ্যান্ডশেক করুন। এভাবে কোনো কথা ছাড়া আচরণের মাধ্যমেই আপনার ইন্টারভিউয়ের দারুণ সূচনা হতে পারে। নয়তো দ্রুত শেষ হয়ে যেতে পারে ইন্টারভিউ।
পোশাক হওয়া চাই মার্জিত

ক্যাজুয়াল ড্রেসে ইন্টারভিউতে যাওয়া ঠিক নয়। আপনাকে মার্জিত পোশাক পড়তে হবে। আপনার মাঝে পেশাদার ও দক্ষতার ছাপ থাকা জরুরী । যে কোম্পানিতে, যে পদের জন্য আবেদন করেছেন আপনি, তার সাথে সঙ্গতি রেখে মার্জিত পোশাক পরা উচিত। সম্ভব হলে ইন্টারভিউয়ের আগে কোম্পানির ড্রেস কোড সম্পর্কে জেনে নিন।

ইন্টারভিউয়ের শুরু থেকেই প্রশ্নকর্তা আপনাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বেশ কিছু তথ্য দিতে পারেন। যদি সেগুলো আপনি না শুনেন, তাহলে বড় কোনো সুযোগ হারাতে পারেন। ভালো যোগাযোগের ক্ষেত্রে শোনা এবং যিনি কথা বলছেন তার কথাগুলো যে আপনি শুনেছেন, সেটি তাকে বোঝানো জরুরী। প্রশ্নকর্তা কিভাবে, কোন স্টাইলে কথা বলছেন, তা উপলব্ধি করুন।

প্রশ্নকর্তা যা জানতে চান, তার চেয়ে বেশি কথা বলা আপনার জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। যদি পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না থাকে, তাহলে প্রশ্নকর্তার নানা প্রশ্নে খেই হারিয়ে ফেলতে পারেন আপনি। এতে নার্ভাস হয়ে বকবকও করতে পারেন। তাই ইটারভিউর জন্য পর্যাপ্ত পড়াশোনা করে যাবেন। পাশাপাশি ইন্টারভিউর আগে বেশ কিছু প্রশ্ন তৈরি করে কোনো বন্ধু বা আত্মীয়ের সহায়তা নিয়ে ইন্টারভিউ দেয়ার চর্চা করবেন। আর যে পদের জন্য আপনি আবেদন করেছেন, তা সম্পর্কে, পদের জন্য যে সব অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছে, সেসব বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নিয়ে তারপর ইন্টারভিউতে যাবেন।

ইন্টারভিউ একটি পেশাগত সাক্ষাৎ। এখানে কেউ আপনার বন্ধু না বা নতুন বন্ধু হওয়ার সুযোগ নেই। তাই প্রশ্নকর্তা সে ভঙ্গিতে প্রশ্ন করছেন, তাকে অনুসরণ করে সেভাবেই উত্তর দিন। ইন্টারভিউয়ের সময় আপনার ব্যক্তিত্বের স্ফুরণ, আত্মবিশ্বাস, আগ্রহ প্রকাশ করা এবং প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করাও জরুরী। তবে খেয়াল রাখতে হবে এসব যেন দৃষ্টিকটু না হয় ।

ইন্টারভিউয়ের সময় আপনাকে পেশাগত ভাষায় কথা বলতে হবে। খেয়াল রাখবেন যেন আপনার কোনো অনুপযুক্ত শব্দ (হতে পারে তা ধর্ম, রাজনীতি, যৌনতা বা অন্য যেকোনো বিষয়ে) চয়ন যেন প্রশ্নকর্তাদের বিব্রত না করে। তাহলে তাৎক্ষণিকভাবেই আপনার ইন্টারভিউ শেষ হয়ে যেতে পারে।

ইন্টারভিউতে উতরে যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার আচরণ একটি বড় ধরণের ভূমিকা রাখে। ইন্টারভিউ রুমে আত্মবিশ্বাস, পেশাদারিত্ব আর শিষ্টাচার এসবের মাঝে সুন্দর ভারসাম্য রক্ষা করতে পারলে জয় আপনার হবেই। উল্টো দিকে আপনি যোগ্যতর হলেও অতি মাত্রায় আত্মবিশ্বাস আর উদ্ধত আচরণ আপনার সুযোগ নষ্ট করে দিতে পারে।

প্রশ্নকর্তা যখন আপনার ক্যারিয়ারের আগের কোনো ঘটনা জানতে চান, তখন আপনার আচরণের ধরণ বোঝারও চেষ্টা করেন তিনি। এক্ষেত্রে যদি নির্দিষ্ট উদাহরণ দিয়ে উত্তর দিতে না পারেন, তাহলে একাধারে আপনি নিজের যোগ্যতা প্রমাণের পাশাপাশি নিজের দক্ষতা সম্পর্কেও কথা বলার সুযোগ হারাবেন । তাই এ ধরণের কিছু সম্ভাব্য ঘটনা ইন্টারভিউয়ের আগে তৈরি রাখুন। নিজের সেসব সফলতার কথা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করুন।

প্রশ্নকর্তা যখন জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনার কোনো প্রশ্ন আছে কিনা?’ তখন বেশিরভাগ প্রার্থী উত্তর দেন ‘না’। এটি আসলে ভুল । প্রশ্ন করার মাধ্যমে আপনি জানতে পারেন, কোম্পানিটি আপনার জন্য সঠিক জায়গা হবে কি না। ইন্টারভিউয়ের সময় যেসব প্রশ্ন আপনাকে করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্য থেকেই বিস্তারিত কিছু জানতে প্রয়োজনীয় প্রশ্ন আপনি পেয়ে যেতে পারেন।

চাকরিটি আপনার খুব জরুরী হতে পারে। কিন্তু ইন্টারভিউয়ের সময় ‘প্লিজ আমাকে চাকরিটা দিন’ ধরণের মরিয়া ভাব দেখাবেন না। এটা আপনার আত্মবিশ্বাস ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ইন্টারভিউয়ের সময় ধীর, স্থির ও দৃঢ়সংকল্প থাকুন। আপনি জানেন চাকরিটা পাওয়ার যোগ্যতা আছে আপনার, প্রশ্নকর্তাকেও সেটা বুঝতে দিন।


Theme Developed BY ThemesBazar.Com